মোবাইল ফোন দ্রুত চার্জ করার জন্য এরই মধ্যে চলে এসেছে নানা ফিচার। তারপরও ব্যস্ত জীবনে তিন-চার ঘণ্টা ধরে ফোনে চার্জ দেওয়ার সময় যেন কারও কাছে নেই। বিশেষ করে পুরনো ফোনগুলো চার্জ হতে অনেক বেশি সময় নেয়।
নতুন ফোনেও কিছুদিন পর থেকে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। আজ আপনাদের জানাবো মোবাইল ফোন দ্রুত চার্জ করার কয়েকটি উপায়।
জিপিএস, ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখুন
জিপিএস, ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথ অন থাকলে প্রচুর ব্যাটারি অপচয় হয়। তাই ফোন চার্জ দেওয়ার সময় ওই অপশনগুলো অন থাকলে চার্জ হতে অনেক বেশি সময় লাগে। সেই কারণে ফোন চার্জে দেওয়ার আগে জিপিএস, ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথ অপশনগুলো টার্ন অফ করে দিন।
চার্জিংয়ের সময় স্মার্টফোন ব্যবহার না করা
ফোন চার্জে থাকা অবস্থায় ব্যবহার করা একদমই উচিত নয়। কল, মেসেজ, বিভিন্ন শপিং এপের ব্যবহার, এমন কি ক্রমাগত গেমও খেলে থাকেন অনেকেই। চার্জে থাকাকালীন ফোন ব্যবহার করলে খুব স্বাভাবিকভাবেই ফোনের চার্জ হতে সময় বেশি লাগে। এমনকি ফোন তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই চার্জে থাকা অবস্থায় ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
অরিজিনাল কেবল ও এডাপ্টার ব্যবহার করা
স্মার্টফোন কেনার সময় তার সঙ্গে যে কেবল এবং এডাপ্টার দেওয়া হয়, সবসময় সেটি দিয়েই ফোন চার্জ করা উচিত। আপনি যদি অন্য কোনো ব্র্যান্ডের চার্জার ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার ডিভাইসের ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং সেই সাথে চার্জিং স্পিডের ওপরেও তার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই সবসময় অরিজিনাল কেবল ও এডাপ্টার ব্যবহার করুন।
ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসিং এপগুলো বন্ধ রাখা
ফোনের স্ক্রিন লক করার পরেও কিছু এপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে। আপনি ব্যবহার না করলেও সেগুলো আপনার অজান্তেই ফোনের ব্যাটারি ক্ষয় করতে থাকে। তাই আপনি ফোনের সেটিংসে গিয়ে দেখতে পারেন যে কোন কোন এপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলছে এবং চার্জ দেওয়ার আগে সেই এপগুলো টার্ন অফ করে দিতে পারেন। এতে আপনার স্মার্টফোনের চার্জিং স্পিড অনেকটাই বেড়ে যাবে।
এয়ারপ্লেন মোড ব্যবহার করা
ফোনের এয়ারপ্লেন মোড অন করে রাখলে ফোনের নেট কানেকশন এবং কলিং ফেসিলিটি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া এই মোড অন করলে একাধিক এপও কাজ করা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ফোনের ব্যাটারির অপচয় অনেক কম হয়, ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই চার্জিং স্পিড বেড়ে যায়। তাই ফোন চার্জ দেওয়ার সময় অবশ্যই এয়ারপ্লেন মোড অন করে রাখুন।
ফাস্ট চার্জিং এডাপ্টার ব্যবহার না করা
মার্কেটে এমন অনেক চার্জার পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে ফোন অতি দ্রুত চার্জ হয়। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে এই চার্জারগুলো ব্যবহার করলে আপনি খুব লাভবান হবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, প্রতিটি ফোনের ব্যাটারির একটি নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটি থাকে, এবং সেই ক্যাপাসিটি অনুযায়ী ওই স্মার্টফোনের সাথে উপযুক্ত চার্জারটি সরবরাহ করা হয়। আর স্মার্টফোনের ব্যাটারিকে দীর্ঘস্থায়ী এবং সুস্থ সবল রাখার জন্য বিশেষজ্ঞরা সেই কারণেই সবসময় স্মার্টফোনের সাথে প্রদত্ত চার্জারটি ব্যবহার করতে বলেন। কিন্তু অযথা ফাস্ট চার্জার ব্যবহার করলে আপনার ফোনের ব্যাটারির কার্যক্ষমতা দিন-কে-দিন কমতে থাকে, পাশাপাশি ফোনের চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতাও কমে যায় এবং ধীরে ধীরে ফোনটিও খারাপ হয়ে যায়। তাই এই ধরনের চার্জার কখনোই ব্যবহার করবেন না।
সারারাত ধরে ফোন চার্জ না দেওয়া
সারাদিন কাজকর্মের পর অনেকেই রাতে শুতে যাওয়ার আগে ফোন চার্জে দেন। কারণ সেই সময় যেহেতু ফোনের ব্যবহার হয় না, তাই অনেকেই সেটিকেই চার্জ দেওয়ার উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন। এর ফলে ফোনটি ফুল চার্জ হয়ে যাওয়ার পরেও এডাপ্টারের সাথে সংযুক্ত থাকে। এর ফলে ধীরে ধীরে ব্যাটারির ক্ষতি হতে থাকে, ঠিক যেমন ভরপেট খাওয়ার পর আরও খেলে বিপদ হয়ে যায়, অনেকটা সেরকম সমস্যাই এক্ষেত্রে দেখা যায়। তাই সারারাত ধরে ফোন চার্জে বসিয়ে রাখা কখনোই উচিত নয়।