চালু হতে যাচ্ছে ভাসমান বেলুন-নেট পরিষেবা

আকাশে ভেসে আছে এক বিশালাকার যান। হঠাৎ দেখলে চমকে যেতে হতে পারে। তবে এটি যান আদতে একটি ভাসমান গ্যাস বেলুন। আর এই ভাসমান এরোস্ট্যাটই ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহ করবে আস্ত একটি দ্বীপপুঞ্জে।

ব্রিটিশ সংস্থা ওয়ার্ল্ড মোবাইলের সৌজন্যে তাঞ্জানিয়ার জাঞ্জিবার (Zanzibar) এবং পেম্বা দ্বীপে এবার চালু হতে চলেছে এমনই অভিনব ভাসমান মোবাইল নেটওয়ার্ক সেন্টার (Mobile Network Centre)বা ভাসমান বেলুন-নেট পরিষেবা।

মাটি থেকে প্রায় এক হাজার ফুট উচ্চতায় ভাসমান, সৌরশক্তি চালিত এই হিলিয়াম বেলুনই সরবরাহ করবে ৩জি ও ৪জি ইন্টারনেট ফ্রিকোয়েন্সি। বেলুনকে কেন্দ্র করে দ্বীপপুঞ্জের ৭০ কিলোমিটার ব্যাসের অঞ্চলজুড়ে পাওয়া যাবে এই ভাসমান বেলুন-নেট পরিষেবা।

কিন্তু হঠাৎ করে মোবাইল টাওয়ার ছেড়ে বেলুনের দ্বারস্থ হওয়া কেন? প্রথমত, জাঞ্জিবার ঘনজনবসতিপূর্ণ এলাকা। তার ওপর অরণ্যের পরিমাণও নেহাত কম নয় এই দ্বীপপুঞ্জে। ফলে এমন অঞ্চলে, অপটিক্যাল ফাইবার বা কেবল প্রতিস্থাপন অনেকটাই খরচ সাপেক্ষ। অন্যদিকে জাঞ্জিবারের মাটি মূলত বালুকাময় ও নমনীয় হওয়ায় মোবাইল টাওয়ার বসানোও বেশ দুঃসাধ্য ব্যাপার। সেদিক থেকে ভাসমান বেলুন-নেট পরিষেবা অনেকটাই কমিয়ে আনবে ইন্টারনেটের খরচ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জাঞ্জিবারের মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। সীমিত ইন্টারনেট কভারেজ এবং উচ্চ মূল্যই তার অন্যতম কারণ।

ওয়ার্ল্ড মোবাইলের হাইব্রিড পরিষেবা চালু হলে, অনেকেই ইন্টারনেটের সুবিধা পেতে পারেন বলেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছে জাঞ্জিবার প্রশাসন। কিছুদিন আগেই সাফল্য পেয়েছে ওয়ার্ল্ড মোবাইলের পাইলট প্রোজেক্ট। এবার শুরু হতে চলেছে তার বাস্তবায়নের কাজ। প্রোজেক্টটি পূর্ণতা পেলে উপ-সাহারা অঞ্চলের মানুষদের জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

২০১৩ সালে বেলুন-নেটের ব্যাপারে সর্বপ্রথম চিন্তাভাবনা শুরু করেছিল গুগল। ২০১৬ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ইন্দোনেশিয়ায় এই পরিষেবাও চালু করেছিল গুগলের শাখা সংস্থা ‘অ্যালফাবেট’। তবে বছর তিনেকের মধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন গুগলের ‘প্রোজেক্ট লুন’। ‘প্রোজেক্ট অ্যাকুইলা’ নামের একইধরনের আরো একটি উদ্যোগ নিয়েছিল ফেইসবুক। তবে এই প্রথম পৃথিবীতে বাণিজ্যিকভাবে বেলুন-নেট পরিষেবা আনতে চলেছে ব্রিটিশ এই সংস্থাটি ।

বন্ধ করতে কীবোর্ড থেকে ESC চাপুন