হোয়াটসঅ্যাপে আসলো এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আপডেট। এই আপডেটে হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত হয়েছে “কমিউনিটিস” যা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজিংকে সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা প্রদান করবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক হোয়াটসঅ্যাপ কমিউনিউটিস সম্পর্কে বিস্তারিত।
হোয়াটসঅ্যাপ কমিউনিউটিস ফিচার এর সংযোজনের কারণে বেশ কিছু অসাধারণ পরিবর্তন এসেছে হোয়াটসঅ্যাপে। বিশেষ করে অধিক মেম্বারের গ্রুপগুলো কমিউনিটিস এর সেরা সুবিধা উপভোগ করতে পারবে। ফাইল শেয়ারিং, ৩২জনের গ্রুপ কল ও ইমোজি রিয়েকশন এর মত নতুন ফিচারের পাশাপাশি আরো যুক্ত হয়েছে এডমিন টুলস ও মডারেশন কন্ট্রোলস।
সাধারণ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চ্যাটে ২৫৬ জন মানুষ অংশ নিতে পারেন। কমিউনিটিতে হাজার হাজার ব্যবহারকারী অংশ নিতে পারবেন। প্রায় অনেকটা সময় কমিউনিটিস ফিচারটি নিয়ে কাজ করে আসছে হোয়াটসঅ্যাপ। বেশ অনেকদিন ধরে অ্যাপটিতে এই ফিচার যুক্ত হওয়ার গুঞ্জন চলে আসছিলো। অবশেষে এই নতুন ফিচার হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারটি অফিসিয়াল হলো।
হোয়াটসঅ্যাপ এর এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবস্থার জন্য প্রচুর প্রাইভেট কমিউনিটি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে থাকে। মূলত এই বিষয়টিকে পুঁজি করে হোয়াটসঅ্যাপ এর এই নতুন “Communities” নামের ফিচারটি জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হোয়াটসঅ্যাপ কমিউনিটিস ফিচারটি টেলিগ্রাম এর মত প্রাইভেসি ফোকাসড অ্যাপকে প্রতিযোগিতা দিতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে আইমেসেজ ও সিগনাল এর মত প্রাইভেট মেসেজিং অ্যাপগুলোর ব্যবহার বেড়েছে। একই সাথে গ্রুপমি, ব্যান্ড, রিমাইন্ড, ইত্যাদি অ্যাপ ও প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে গ্রুপ চ্যাটের মাধ্যমে যোগাযোগের জন্য।
“অনলাইনে যোগাযোগের মাধ্যম পরিবর্তিত হচ্ছে যা এখন দৃশ্যমান। আমাদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যবহারকারী সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ও ফিডস ব্যবহার করে মজার কনটেন্ট খুঁজে পাই ও আপডেটেড থাকি। তবে আরো গভীরভাবে যোগাযোগের অংশ হিসেবে মেসেজিং বর্তমানে ডিজিটাল জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। এনক্রিপশনের ফলে এটি অধিক নিরাপদ, যার ফলে চ্যাটগুলো অপেক্ষাকৃত ব্যক্তিগত ও ঘনিষ্ঠ,” নতুন ফিচার সম্পর্কে এক ফেসবুক পোস্টে এসব অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন সিইও, মার্ক জাকারবার্গ।
হোয়াটসঅ্যাপ কমিউনিউটিস ফিচারটি অনেকটা ফেসবুক গ্রুপ এর মতোই কাজ করবে। ফেসবুক গ্রুপের মত হোয়াটসঅ্যাপ কমিউনিটিস ব্যবহার করে বিভিন্ন অরগানাইজেশন, ক্লাস ও স্কুল তাদের সদস্যদের নেটওয়ার্ক তৈরী করতে পারবে ও সাথে বজায় থাকবে ভার্চুয়াল যোগাযোগ। উল্লেখ্য, হোয়াটসঅ্যাপ কমিউনিটিতে সাব-গ্রুপ ফিচারও থাকবে যেখানে মেম্বাররা ছোট ছোট দলের মাধ্যমে আলাপ করতে পারবেন।
তবে ফেসবুক গ্রুপ ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ একে অন্যের পরিপূরক হয়ে উঠতে পারে, এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। দুই ধরনের গ্রুপের ধরন ও গঠনের পেছনে কারণ বেশ আলাদা। ফেসবুক গ্রুপসমূহ একই বিষয়ে ইন্টারেস্ট যোগাযোগবিহীন অপরিচিত মানুষদের এক ছাতার নিচে আনতে চেষ্টা করতে পারে। অন্যদিকে হোয়াটসঅ্য্যপ কমিউনিটিস হলো প্রাইভেট ও পারসোনাল গ্রুপ, যেখানে মেম্বাররা ইতিমধ্যে পরিচিত এমনকি একে অন্যের সাথে একাধিক উপায়ে সংযুক্ত।
ফেসবুক গ্রুপ ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এর মধ্যে আরেকটি পার্থক্য হলো গ্রুপসমূহ পাবলিক বা প্ল্যাটফর্মে সার্চ করে খুঁজে নেওয়া গেলেও হোয়াটসঅ্যাপ কমিউনিটিস এ সার্চ করে গ্রুপ খোজাঁ যাবেনা। একটি কমিউনিটিস এ কোনো ব্যক্তিকে ইনভাইট করলে তবেই সেই ব্যক্তি জয়েন করতে পারবেন।
এডমিনগণ চাইলে ইতিমধ্যে রয়েছে এমন গ্রুপগুলোকে কমিউনিটিস এর সাথে লিংক করতে পারবেন, আবার চাইলে সম্পূর্ণ স্ক্র্যাচ থেকেও গ্রুপ তৈরী করতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ এর বিশ্বাস হলো এমন অনেক গ্রুপ চ্যাট রয়েছে যা হোয়াটসঅ্যাপ কমিউনিটিস ফিচারটির যথাযথ ব্যবহারে সক্ষম হবে।
হোয়াটসঅ্যাপ কমিউনিটিস ম্যানেজ করার জন্য এডিমনদের জন্য নতুন কিছু ফিচার আনা হয়েছে। কোনো মেম্বারকে আলাদাভাবে কমিউনিটিতে এড করা যাবে, আবার চাইলে ইনভাইট লিংক দ্বারাও নতুন মেম্বার জয়েন হতে পারবেন। গ্রুপের যেকোনো মেম্বারকে রিমুভ করার ক্ষমতা রয়েছে এডমিন এর কাছে। এছাড়া কমিউনিটি গ্রুপে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু এডমিন এনাউন্সমেন্ট শেয়ার করতে পারবেন।
উল্লেখিত সকল আপকামিং ফিচার হোয়াটসঅ্যাপে খুব শীঘ্রই পেয়ে যাবেন সকল ব্যববারকারী। চলুন একনজরে দেখে নিই হোয়াটসঅ্যাপে নতুন আসা ফিচারগুলো-