প্রায় প্রতিদিন নতুন ম্যালওয়্যার এর আবির্ভাব হচ্ছে। এই ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে একজন ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে আপনি যদি চিন্তিত থাকেন, তবে উইন্ডোজ কম্পিউটারের নিরাপত্তা বাড়াতে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন। মাত্র তিনটি সহজ উপায়ে আপনার কম্পিউটারের নিরাপত্তা নিয়ে যেতে পারেন অন্য মাত্রায়।
মাইক্রোসফট এর উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে উইন্ডোজ সিকিউরিটি নামে একটি বিল্ট-ইন এন্টিভাইরাস রয়েছে। নিয়মিত সিকিউরিটি আপডেট এর মাধ্যমে এই সেবাকে উন্নত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে মাইক্রোসফট। এছাড়াও সেটিংসে আরো কিছু অপশন রয়েছে, যার মাধ্যমে কম্পিউটারের নিরাপত্তা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক উইন্ডোজ কম্পিউটারের গুরুত্বপূর্ণ ৩টি সেটিংস সম্পর্কে যা কম্পিউটারের সিকিউরিটিকে আরো বাড়িয়ে তুলবে।
উইন্ডোজ কম্পিউটারে বিল্ট-ইন র্যানসমওয়্যার প্রটেকশন রয়েছে। র্যানসমওয়্যার প্রটেকশন চালু করে দিলে কম্পিউটারে থাকা ফাইল ও ফোল্ডারে সুরক্ষা চালু হয়ে কম্পিউটারের নিরাপত্তা আরো দুর্ভেদ্য হয়ে যাবে।
Ransomware Protection ফিচারটি খুঁজে নিয়ে Controlled Folder Access অপশনটি চালু করলে আনঅথোরাইজড অ্যাপস ও প্রোগ্রাম ফোল্ডার ও ফাইলের অ্যাকসেস পাবে না। অর্থাৎ কম্পিউটারে থাকা ফাইল যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত র্যানসমওয়্যার অ্যাটাকের শিকার না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করে এই ফিচারটি।
উইন্ডোজ র্যানসমওয়্যার প্রটেকশন ফিচারটি সিকিউরিটি অ্যাপে পেয়ে যাবেন। উইন্ডোজ সিকিউরিটিতে প্রবেশ করতে সেটিংসে প্রবেশ করে Privacy & Security অপশনের ক্লিক করে এরপর Windows Security সিলেক্ট করুন।
উইন্ডোজ সিকিউরিটিতে প্রবেশ করার পর “Virus & threat protection” এ ক্লিক করুন। এরপর “Manage ransomwware protection” অপশনে ক্লিক করে র্যানসমওয়্যার প্রটেকশন পেজে প্রবেশ করুন।
এরপর “Controlled folder access” চালু করে দিন, এর ফলে এপ্রুভড না করা অ্যাপসমূহ ডকুমেন্ট, ছবি, ভিডিও বা যেকোনো ফাইল অ্যাকসেস বা এডিট করতে পারবে না।
উইন্ডোজ বিটলকার ব্যবহার করেও কম্পিউটারের সিকিউরিটি বাড়ানো যেতে পারে। বিটলকার ফিচারটি চালু করলে কম্পিউটারের ফাইলগুলো এনক্রিপটেড হয়ে যায়। এই এনক্রিপশন ব্যবস্থা মাইক্রোসফট একাউন্ট ও কম্পিউটারে বিল্ট-ইন থাকা টিপিএম চিপ এর সমন্বয়ে কাজ করে।
উইন্ডোজ বিটলকার একটি রিকভারি কি তৈরী করে যা উইন্ডোজ রিসেট বা রিস্টোর স্ক্রিন থেকে ফাইল অ্যাকসেস করার সুবিধা প্রদান করে। এই ফিচারটি উন্ডোজ ১০ ও উইন্ডোজ ১১ এর প্রো ভার্সনে ব্যবহার করা যায়। উইন্ডোজ বিটলকার ব্যবহারের নিয়ম জানতে এখানে ক্লিক করুন।
উইন্ডোজ স্যান্ডবক্স হতে পারে কম্পিউটারের নিরাপত্তা বাড়ানোর একটি অসাধারণ উপায়। এই ফিচারের মাধ্যমে কম্পিউটারে একটি স্যান্ডবক্স ভার্চুয়াল মেশিন ব্যবহার করা যায়। যেসব প্রোগ্রাম ইন্সটল করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাগত ঝুঁকি আছে বলে মনে হয়, সেসব অ্যাপ প্রথমে এই ভার্চুয়াল মেশিনে ইন্সটল করে পরীক্ষা করা যেতে পারে।
এছাড়া কোনো ফাইলে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার আছে বলে সন্দেহ হলে তা ভার্চুয়াল মেশিন পরীক্ষা করতে পারেন। উল্লেখ্য যে এই ফিচারটি ও শুধুমাত্র উইন্ডোজ এর প্রো ভার্সনে কাজ করবে।
Windows Features চালু বা বন্ধ করে উইন্ডোজ স্যান্ডবক্স ফিচারটি চালু করা যাবে। ফিচারটি চালু করার পর কম্পিউটার রিস্টার্ট করার পর স্যান্ডবক্স মোডে উইন্ডোজ ব্যবহার করতে পারবেন। এই ফিচারের মাধ্যমে সফটওয়্যার বা ফাইল এর নিরাপত্তা যাচাই করা কিছুটা সময়সাপেক্ষ হলেও কম্পিউটারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশিতকরণে এটি বেশ কাজে আসতে পারে।
ক্ষতিকর প্রোগ্রাম বা ফাইল থেকে কম্পিউটারকে বাড়তি সুরক্ষা প্রদানের অসাধারণ একটি উপায় হতে পারে উইন্ডোজ স্যান্ডবক্স। ফিচারটি ব্যবহারের আগে অবশ্যই প্রয়োজনীয় রিকোয়ারমেন্টস থাকতে হবে।
উইন্ডোজ স্যান্ডবক্স চালু করতে কন্ট্রোল প্যানেলে প্রবেশ করুন। সার্চ করে খুব সহজে কন্ট্রোল প্যানেলে প্রবেশ করতে পারবেন। এরপর Turn Windows Features on or off অপশনে ক্লিক করুন। Windows Features উইন্ডো থেকে Windows Checkbox অপশন এর পাশে থাকা চেকমার্ক সিলেক্ট করুন ও OK তে ক্লিক করুন। স্যান্ডবক্স ইন্সটল হওয়ার পর কম্পিউটার রিস্টার্ট করে স্যান্ডবক্স ব্যবহার শুরু করতে পারবেন।