কেউ একজন পাসকোড প্রদান করা ছাড়া শুধুমাত্র তার ফোন হাতে নিয়ে আনলক করলো, কিন্তু আপনি যখন চেষ্টা করতে গেলেন তখন দেখলেন ফোনে আসলে লক দেওয়া রয়েছে – আপনার সাথে কখনো এমন হয়েছে কি? যদি উল্লেখিত ঘটনা আপনি দেখে থাকেন, তবে ইতিমধ্যে গুগল স্মার্ট লক ফিচার এর কাজ আপনি ধরতে পারবেন।
এই ফিচারটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ডিভাইস আনলক করার বিষয়টিকে সহজ করে দেয়। Smart Lock for Android, Smart Lock for Passwords, ও Smart Lock for Chromebook – এই তিন ধরনের সুবিধা পেয়ে যাবেন গুগল স্মার্ট লক এর মাধ্যমে। তাহলে চলুন জেনে নিই গুগল স্মার্ট লক কি, স্মার্ট লক এর ফিচারসমূহ ও ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।
গুগল এর স্মার্ট লক বা অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট লক প্রথম পরিচয় করে দেওয়া হয় অ্যান্ড্রয়েড ৫.০ ললিপপে। মূলত নিরাপদ পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট শর্তানুসারে কোনো পাসকোড প্রদান করা ছাড়া এর দ্বারা ফোন আনলক করা যায়। অর্থাৎ সময় অপচয় না করে সরাসরি ফোন আনলক হয়ে যাবে সেট করা শর্তের ভিত্তিতে।
অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস, কিছু অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, ক্রোমবুক ও ক্রোম ব্রাউজারে স্মার্ট লক ফিচারটি ব্যবহার করা যায়। গুগল ক্রোমে এই ফিচারটির দ্বারা বিভিন্ন সাইটের পাসওয়ার্ড সেভ করে রাখা যায়। এছাড়া বিভিন্ন অ্যাপের পাসওয়ার্ডও গুগল একাউন্টে সেভ করে রাখা যায় এই স্মার্ট লক এর মাধ্যমে।
গুগল স্মার্ট লক অনেক ধরনের ফিচার অফার করে যা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমনঃ
চলুন প্রথমে জানি কিভাবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে স্মার্ট লক সেট করে ব্যবহার করতে হয়। স্মার্ট লক ব্যবহার করতে ফোনে পাসকোড বা অন্য যেকোনো ধরনের স্ক্রিন লক সেট করা থাকতে হবে। স্ক্রিন লক সেট করা হয়ে গেলে নিচের প্রক্রিয়া অনুসরণ করুনঃ
উল্লেখ্য যে আপনার ফোনের ব্র্যান্ড এর উপর ভিত্তি করে স্মার্ট লক সেটিংস ভিন্ন স্থানে থাকতে পারে। এটা অনেক সময় সিক্যুরিটি > প্রাইভেসি > ট্রাস্ট এজেন্ট অপশনের মধ্যে থাকতে পারে। এছাড়া সেটিংসে প্রবেশ করে Smart Lock লিখে সার্চ করেও আপনি এই সেটিংস খুঁজে নিতে পারবেন।
ক্রোমবুকে স্মার্ট লক একটু ভিন্নভাবে কাজ করে। তবে খুব সহজে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস কানেক্ট করে ক্রোমবুক আনলক করতে পারবেন। উভয় ডিভাইসে একই গুগল একাউন্টে কানেক্ট করতে হবে। এখানে ক্রোম ওএস ভার্সন ৭১ বা নতুন এবং অ্যান্ড্রয়েড ৫.১ বা নতুন হতে হবে। গুগল একাউন্টে সাইন ইন করা হয়ে গেলে ক্রোমবুকে স্মার্ট লক সেট করতে নিচের নির্দেশনা অনুসরণ করুনঃ
ডিভাইস দ্রুত অ্যাকসেস করার পাশাপাশি বিভিন্ন ডিভাইসে পাসওয়ার্ড শেয়ার করার অপশন প্রদান করে থাকে গুগল স্মার্ট লক। স্ক্রিন লক ছাড়া ফোন অ্যাকসেসে সাহায্য করে স্মার্ট লক ও আপনার পছন্দের ওয়েবসাইট বা অ্যাপে দ্রুত লগিনে সাহায্য করতে পারে।
তবে এই ফিচার ব্যবহার করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখা দরকার। যেমনঃ ট্রাস্টেড প্লেস অপশনের ক্ষেত্রে আপনার ঘর বা অফিস সিলেক্ট করলে উক্ত স্থানে থাকা সকল ব্যক্তিকে আপনি বিশ্বাস করেন কিনা সে বিষয় নিশ্চিত করা জরুরি। কেননা উক্ত স্থান যদি আপনি ট্রাস্টেড প্লেস হিসেবে সিলেক্ট করেন তাহলে ওই স্থানে যখন অবস্থান করবেন তখন অনেক ক্ষেত্রে পাসকোড ছাড়াই ফোন আনলক করা যাবে। আবার অন-বডি ডিটেকশন ও ট্রাস্টেড ডিভাইস অপশন সিলেক্ট করলে অন্যদের দ্বারাও ফোন আনলক হয়ে যেতে পারে।
তবে এই ফিচার আপনার গুগল একাউন্ট সেটিংসে প্রবেশ করে বেশ সহজে বন্ধ করতে পারবেন। অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ও ক্রোমবুকে এই ফিচার বন্ধ করা যায় বেশ সহজেই। যেখান থেকে স্মার্ট লকের যে ফিচারটি চালু করেছেন সেই একই জায়গায় গিয়েও সংশ্লিষ্ট ফিচার বন্ধ করা যাবে। ফিচারটি সম্পর্কে আরও জানতে পারবেন গুগলের অফিসিয়াল পেজ থেকে।