আমাদের নিত্যদিন এর প্রয়োজনে আমরা অনেকেই ডেবিট কার্ড ব্যাবহার করে থাকি। চলুন জেনে নিই ডেবিট কার্ড কি ও কিভাবে কাজ করে, ডেবিট কার্ডের ধরন, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য।
ডেবিট কার্ড হলো একটি পেমেন্ট কার্ড, যা ব্যবহারে সরাসরি ব্যবহারকারীর কারেন্ট একাউন্ট বা চেকিং একাউন্ট থেকে অর্থ কেটে নেওয়া হয়। ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা ক্রয়ের পাশাপাশি এটিএম মেশিন থেকে টাকা তোলা ও অথোরাইজড মার্চেন্টের কাছে পেমেন্ট করা যায়। সহজ ভাষায় ডেবিট কার্ড দ্বারা কোনো সেবা বা পণ্যের অর্থ সরাসরি ব্যাংক একাউন্ট থেকে কেটে নেয়া হয়।
ক্রেডিট কার্ড সাধারণত চার কোণার প্লাস্টিকের কার্ড যা চার্জ কার্ড নামেও পরিচিত। ব্যাংক বা ক্রেডিট ইউনিয়নে থাকা চেকিং একাউন্ট এর সাথে সংযুক্ত থাকে ডেবিট কার্ড। একাউন্টের ফান্ডে জমা থাকা অর্থ খরচ করার মাধ্যম হলো ডেবিট কার্ড।
ডেবিট কার্ড মূলত এটিএম কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড এর সংমিশ্রণ হিসেবে কাজ করে। কেনাকাটার পাশাপাশি ব্যাংকের এটিএম মেশিনে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা তোলা যায়। আবার অনেক ব্যাংক তাদের নিজস্ব নেটওয়ার্কের ডেবিট কার্ড বাদ দিয়ে ভিসা ও মাস্টারকার্ড এর মত বড় কার্ড-পেমেন্ট প্রসেসর এর ডেবিট কার্ড ইস্যু করছে। এই ধরনের কার্ডগুলো সাধারণত চেকিং একাউন্টের সাথেই প্রদান করা হয়ে থাকে।
ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ করা অর্থ একাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হয়। কিছু কিছু ডেবিট কার্ডে আবার স্পেন্ডিং লিমিট থাকে, যার মানে হলো প্রতি ২৪ ঘন্টায় নির্দিষ্ট এমাউন্টের চেয়ে বেশি খরচ করা যায়না।
সাধারণত চার ধরনের ডেবিট কার্ড দেখা যায়। কোন প্রতিষ্ঠান কার্ড ইস্যু করছে মূলত তাই হলো এই কার্ডগুলোর প্রধান পার্থক্য।
চেকিং একাউন্ট খুললে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ডেবিট কার্ড ইস্যু করে থাকে, তবে এই কার্ড এর জন্য আবেদন করতে হয়। কার্ড রিসিভ করার পর কার্ড এর সাথে প্রাপ্ত নির্দেশনা অনুসরণ করে কার্ড একটিভ করতে হয়।
কার্ড একটিভ করার প্রক্রিয়াতে কার্ড এর জন্য পিন সেট করতে হয়। এই পিন পরবর্তীতে টাকা তোলা বা কেনাকাটার ক্ষেত্রে কাজে আসে। আপনার যদি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে ইচ্ছে না হয়, তাহলে অনলাইনে সার্ভিস এর মাধ্যমে ডেবিট কার্ড নিতে পারেন। তবে সেগুলো অনেক ব্যয়বহুল এবং সাধারণত ডলার কারেন্সির হয়ে থাকে। তাই ব্যাংক একাউন্ট খোলাই উত্তম।
উল্লেখ্য যে, প্রিপেইড ক্রেডিট কার্ড এর ফি রয়েছে যা নিয়মিত বিরতিতে একাউন্টের ডিপোজিট থেকে কেটে নেওয়া হয়। প্রায় সকল ব্যাংকই ডেবিট কার্ড প্রদান করে ও প্রতিট ব্যাংক দ্বারা কার্ড ইস্যু করার প্রক্রিয়া প্রায় একই ধরনের হয়ে থাকে।
সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডেবিট কার্ডে তেমন কোনো ফি নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে ডেবিট কার্ড এর জন্য ফি প্রদান করতে হয়, যেমনঃ
ডেবিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা, উভয়ই বিদ্যমান। চলুন জেনে নেওয়া যাক ডেবিট কার্ড এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে।
ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের কিছু পার্থক্য আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি। প্রথমত ডেবিট কার্ডের ফান্ড আসে নিজের একাউন্ট থেকে, অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ড মূলত ফান্ডের বাইরে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যবহারের সুযোগ প্রদান করে। ডেবিট কার্ড ব্যাংকে থাকা ডিপোজিট ব্যবহার করে ও ক্রেডিট কার্ড একটি ক্রেডিট বা লোন ভিত্তিক ব্যবস্থার উপর কাজ করে।
ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে চেক লেখা ছাড়াই পেমেন্ট বা অর্থ উত্তোলন করা সম্ভব হয়। তবে আপনার জমা থাকা অর্থের সাথে খরচের অভ্যাসের মিল রাখা খুবই জরুরি। সুতরাং, বুঝেশুনে খরচ করতে পারলে ক্রেডিট কার্ডের চেয়ে ডেবিট কার্ড ব্যবহার আপনাকে অধিক নিশ্চিন্ত রাখবে।