টিকটক বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। এর মাধ্যমে আয়ের অনেক উপায় রয়েছে। বিশ্বব্যাপী অসংখ্য ক্রিয়েটর টিকটক এর মাধ্যমে আয় করে জীবিকা অর্জন করছেন। আপনি যদি একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হন, তবে টিকটক কে আপনার আয়ের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার টিকটক একাউন্টে যথেষ্ট ফলোয়ার ও নিয়মিত ভিউস থাকলে খুব সহজেই টিকটক থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। আসুন জানি টিকটক থেকে টাকা আয় করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে।
আপনার টিকটক একাউন্টটি যদি ফ্যাশন বা প্রোডাক্ট-নির্ভর হয়, তবে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে আয়ের সুযোগ রয়েছে। ভিডিওতে ব্যবহৃত পণ্যের বিজ্ঞাপন করা অনেকটা সহজ। এছাড়া অনেক ভিউয়ার ভিডিওতে দেখানো প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে চায়। এসব কারণে প্রোডাক্ট বিক্রির সেরা একটি প্ল্যাটফর্ম হতে পারে টিকটক। শুধুমাত্র পণ্য নয়, সেবা বা সার্ভিসও বিক্রি করা যেতে পারে টিকটক একাউন্টের মাধ্যমে।
টিকটকে বিক্রি করতে আপনার নিজের প্রোডাক্ট বা সেবা থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। চাইলে অন্যের প্রোডাক্ট এর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেও টিকটক থেকে আয় করা যাবে। আপনার প্রোফাইলে অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করলে ভিউয়ারগণ ভিডিওতে দেখানো প্রোডাক্ট কিনতে পারবে, এবং আপনিও সেই বিক্রিত পণ্য থেকে কমিশন পাবেন। টিকটক থেকে আপনার অন্য সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে ভিউয়ারদের নিয়ে এসে তাদের পছন্দের প্রোডাক্ট কেনার সুযোগ করে দিয়ে উভয়ই লাভবান হতে পারেন।
দেশের আর্ট ইন্ডাস্ট্রি বর্তমানে বেশ হাইপে আছে, যার ফলে নিজেদের শিল্পকর্ম ভাইরাল করতে শিল্পীরা ঝুঁকছে টিকটক এর দিকে। বর্তমানে আর্ট ভাইরাল করার অন্যতম মাধ্যমই হয়ে উঠেছে টিকটক। তাই টিকটক থেকে টাকা ইনকাম এর আরেকটি উপায় হতে পারে শিল্পকর্ম প্রোমোট করা। আবার আপনি যদি নিজেই একজন শিল্পী হোন, তাহলে তো অবশ্যই ভিডিওতে আপনার শিল্পকর্ম ব্যবহার করতে পারেন।
টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ড হলো টিকটক এর প্রোগ্রাম যার মাধ্যমে ভালো ক্রিয়েটরদের পুরস্কৃত করে থাকে টিকটক। আপনার ভিডিওতে যত বেশি এনগেজমেন্ট থাকবে, টিকটক আপনাকে তত বেশি পুরস্কার দিবে। বিজ্ঞাপন থেকে টাকা আয় করতে টিকটক চায় এনগেজিং কনটেন্ট, আর আপনি যদি এই ধরনের ভিডিও তৈরী করতে পারেন তবে ক্রিয়েটর ফান্ড থেকে আয় এর সুযোগ রয়েছে। শেষ ৩০দিনে কমপক্ষে ১লক্ষ ভিডিও ভিউস থাকলে তবেই ক্রিয়েটর ফান্ডের জন্য আবেদন করা যায়।
যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের মত টিকটকেও স্পন্সরড পোস্ট এর মাধ্যমেও আয় করা যায়। বিভিন্ন ব্র্যান্ড তাদের প্রোডাক্টের প্রোমোশন চালাতে স্পন্সরড পোস্টের বিনিময়ে টিকটক ক্রিয়েটরদের টাকা প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশেও অসংখ্য ব্র্যান্ড টিকটক ক্রিয়েটরদের স্পন্সরড পোস্টের বিনিময়ে অর্থ প্রদান করে থাকে। আপনার টিকটক একাউন্টে যথেষ্ট এনগেজমেন্ট থাকলে, আপনিও এই ধরনের স্পন্সরড ডিল থেকে আয় করতে পারবেন। এছাড়া অনেক ব্র্যান্ড আপনাকে তাদের ব্র্যান্ড এম্বেসেডর বানাতে আগ্রহী হতে পারে, যা থেকে মোটা অংকের টাকাও আয় করা যেতে পারে।
ধরুন আপনি টিকটকে যেকোনো ধরনের শিক্ষামূলক বিষয় নিয়ে কনটেন্ট তৈরী করেন। সেক্ষেত্রে টিকটক এর শর্ট ভিডিও এর বাইরে উক্ত বিষয়ে আপনার কোর্স তৈরী করতে পারবেন। এছাড়া স্পেশাল কনটেন্ট সাবস্ক্রিপশন এর বিনিময়ে ভিউয়ারদের কাছে উপস্থাপন করেও আয়ের প্রচলন বেশ জনপ্রিয় হয়েছে বর্তমানে। অর্থাৎ আপনার যদি কোনো দক্ষতা থাকে, তবে তা অন্যদের শিখিয়েও আয় করা যেতে পারে।
আপনার কাজের দক্ষতা দেখিয়ে টিকটক থেকে ফ্রিল্যান্সিং গিগ পেতে পারেন। অনেক কোম্পানি বা ব্যক্তি আপনার কাজ টিকটকে খুঁজে পেয়ে আপনাকে হায়ার করতে ইচ্ছুক হতে পারে। ভিডিও এডিটিং, অভিনয়, মডেলিং, এসব হতে পারে সম্ভাব্য কিছু ফ্রিল্যান্সিং প্রজেক্ট। এই কারণে যেকোনো ধরনের টিকটক ক্রিয়েটরের উচিত তাদের প্রোফাইলে যোগাযোগের তথ্য রাখা।
টিকটক একাউন্টের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই টিকটক একাউন্টে ফ্যান ফলোয়িং তৈরী করে একাউন্ট বিক্রি করে ভালো অংকের অর্থ আয় করা যেতে পারে। আমাদের দেশে অনেকে টিকটক শুরু করার সময় লাইক ও ফলোয়ার যুক্ত একাউন্ট কিনতে চান, এইক্ষেত্রে আপনার কাছে যদি বিক্রি করার মত একাউন্ট থাকে, তবে টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আবার আপনার চালানো কোনো একাউন্ট ম্যানেজ করার মত সময় না থাকলে তা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে আগে টিকটক কর্তৃপক্ষের কী নির্দেশনা রয়েছে তা ভালোভাবে যাচাই করে নিন। বিভিন্ন সময় এ ব্যাপারে বিভিন্ন রকম নির্দেশনা থাকতে পারে। তাই আগে এ ব্যাপারে টিকটকের পলিসি জেনে নিন। তারপর কাজটি করুন।