ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাককারী ৩ হ্যাকার গ্রেপ্তার

ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাক করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ৩ হ্যাকারকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির সিটিটিসি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। হ্যাকাররা সুপার শপ স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাক করে ১৮ লাখ টাকা মূল্যের ডিজিটাল ভাউচার তৈরি ও জালিয়াতি করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, মো. নাসিমুল ইসলাম, রেহানুর হাসান রাশেদ ও রাইসুল ইসলাম। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে হ্যাকিং এর কাজে ব্যবহৃত ৬টি মোবাইল সেট, ২টি ল্যাপটপ ও ১টি সিপিইউ, ক্রিপ্টোকারেন্সি, নগদ টাকা, ইলেকট্রনিক কার্ড ও স্বপ্ন ই-ভাউচারের মাধ্যমে কেনা বিপুল পরিমান পণ্যসামগ্রী জব্দ করা হয়।

শনিবার নওগাঁ জেলা, গাইবান্ধা জেলা ও রাজধানীর মিরপুর এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।রোববার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস বিফিংয়ে সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।

সিটিটিসির প্রধান বলেন, সুপার শপ ‘স্বপ্ন’ তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সারাদেশের ১৮৬টি আউটলেটের সেলস মনিটরিং, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট, কর্মী ব্যবস্থাপনা, আর্থিক লেনদেনের হিসাব, ডিজিটাল ভাউচার ম্যানেজমেন্টসহ সকল ব্যবসায়িক কর্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। স্বপ্ন এর ডিজিটাল সিস্টেমটি তাই এডভান্স সাইবার সিকিউরিটি প্রটোকল অনুযায়ী অত্যন্ত সুরক্ষিত করে তৈরি করা হয়েছিল। এর শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ব্রিচ করে বিপুল অংকের অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক ডিজিটাল ভাউচার জেনারেট করে বিক্রি করা হয়।

‘বিষয়টি গত মাসের মাঝামাঝিতে ‘স্বপ্ন’ কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তারা বিষয়টি ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগকে অভহিত করেন। পরে এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ’ জানান তিনি।

তিনি বলেন, সুপার শপটির ডিজিটাল সিস্টেমের ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও রিভার্স এনালাইসিসসহ উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে হ্যাকার চক্রটির ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট শনাক্ত করে। গ্রেপ্তারকৃতরা ‘স্বপ্ন’-এর ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাক করে ১৮ লাখ টাকা মূল্যের ডিজিটাল ভাউচার তৈরি করে ফেইসবুক গ্রুপের মাধ্যমে শতকরা ২৫ ভাগ ছাড়ে কয়েকটি ই-কমার্স ব্যাবহারকারীর নিকট বিক্রি করে। এভাবে তারা জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাকাউন্টে জমা করে। তাদের ডিজিটাল ডিভাইস থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা সমমূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।

‘ইতোমধ্যে হ্যাকার চক্রের সদস্যরা আন্তর্জাতিক অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট https://www.freelancer.com, https://xrosswork.com এবং বাংলাদেশি বেশ কয়েকটি ই-কমার্স সাইটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিস্টেম সিকিউরিটি ব্রিচ করে ‘বাউন্ট’ দাবি করে। এছাড়াও তারা প্রথম সারির বাংলাদেশি এয়ারলাইন্স, প্রসিদ্ধ বাস কোম্পানি, ইলেকট্রনিক গেজেট, চেইন আউটলেটসহ স্বনামধন্য অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হ্যাকিং এর মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত করে। এমনকি সুচতুর এই হ্যাকারদের কাছে সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমের একসেস রয়েছে। তারা বিভিন্ন ডার্ক ওয়েব মার্কেট থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিনিময়ে লগইন ক্রিডেনশিয়াল ক্রয় করে, যা ডিজিটাল ভাউচার তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়’ জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

বন্ধ করতে কীবোর্ড থেকে ESC চাপুন