সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ৩০৩ সেবা ডিজিটাইজড হলো

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার ৩০৩ টি সেবা ডিজিটাইজড করা হয়েছে। বুধবার ডিজিটাইজড করা এসব সেবার উদ্বোধন করেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এতে উপস্থিত ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, সংস্কৃতি সচিব মোঃ আবুল মনসুর ।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে অন্যতম একটি উল্লেখ করে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর তত্ত্বাবধানে বিগত ১২ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে করোনা মহামারীর সময়ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও করোনাকালীন ১৯ মাসে দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রশাসনিক কার্যক্রম, বিচারক ব্যবস্থাসহ সবকিছু সচল ছিল।

তিনি বলেন, ই-নথির মাধ্যমে গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে দেড় কোটিরও বেশি ফাইল ডিজিটাল ব্যবস্থায় সম্পাদন করা সম্ভব হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে ১১ হাজার অফিস ও লাখেরও বেশি কর্মকর্তা এটুআইয়ের তৈরি ইলেক্ট্রনিক ফাইল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার (ই-নথি) ব্যবহার করেছে। এর ফলে শত শত কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

পলক বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন দেশের ৭৩টি লাইব্রেরি ৩০০ কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে কেন্দ্রীয় আর্কাইভ ডিজিটাইজ এবং দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বাতিঘর বাংলা একাডেমিকে ডিজিটাইজ করার বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ প্রযুক্তিগত সহায়তাসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করে নাগরিক সেবাকে সুলভ করা, সহজ করা এবং স্বচ্ছতা ও দ্রততার সাথে সকল সেবাকে জনগণের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মাইগভ র্যাপিড ডিজিটাইজেশন পদ্ধতির ৫টি মূলনীতি রয়েছে। যা হলো- পরিচয় দিবো একবার, সেবা নেবো বারবার, চাওয়ার আগেই সেবা প্রদান;, আবেদন করবো, যেকোন সময়ে, যেকোন পদ্ধতিতে, যেকোন স্থান হতে; কম সময়, ব্যয় ও ভ্রমণে উন্নত সেবা প্রাপ্তি এবং গ্রাহক সন্তুষ্টির পরিমাপ।”

তিনি বলেন, দেড় বছরের মধ্যে ১৭টি মন্ত্রণালয়কে একত্রিত করে এক হাজারেরও বেশি সেবাকে ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে একটি সিঙ্গেল প্ল্যাটফর্ম মাইগভ এ নিয়ে আসা হয়েছে।

কে এম খালিদ বলেন, ‘মাইগভ র্যাপিড ডিজিটাইজেশন প্ল্যাটফর্মের আওতায় ইতোমধ্যে যে সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগের ডিজিটাইজেশন সম্পন্ন হয়েছে, তার মধ্যে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ সংখ্যক সেবার ডিজিটাইজেশন সম্পন্ন হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্র ও কর্মপরিধি কত ব্যাপক।

তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত ১৭টি দপ্তর-সংস্থার মধ্যে ১০টি দপ্তর-সংস্থার ডিজিটাইজেশন সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৭টি সংস্থার র্যাপিড ডিজিটাইজেশন সম্পন্ন হলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাইজেশনকৃত সেবার সংখ্যা আরও অনেক বৃদ্ধি পাবে।”

সমন্বিত সেবা প্রদান প্ল্যাটফর্ম (ওয়েব এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন) হিসেবে মাইগভ (www.mygov.bd) এ বিদ্যমান প্রযুক্তির বিল্ডিং ব্লকসমূহের পাশাপাশি মন্ত্রণালয় ও দপ্তর বা সংস্থার বিদ্যমান ই-সেবার সিস্টেমসমূহ প্ল্যাটফর্মে সহজেই ইন্টিগ্রেশনের সুযোগ রয়েছে।

মাইগভ পদ্ধতির ৭টি ধাপ (প্রস্তুতি পর্ব, এনালাইসিস এন্ড ডিজাইন, ডিজিটাইজেশন, ভ্যালিডেশন, ইন্টিগ্রেশন, লঞ্চিং, কন্টিনিউইটি এন্ড ম্যাচিউরিটি) অনুসরণ করে এ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে। ডিজিটাইজ করা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সেবার মধ্যে নাগরিক সেবা আছে ৯৬টি, ব্যবসা সংক্রান্ত সেবা আছে ১৯টি এবং অভ্যন্তরীণ সেবা আছে ২১৮টি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মাইগভ র্যাপিড ডিজিটাইজেশন পদ্ধতিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার ডিজিটাইজড হওয়া সেবা বিষয়ে উপস্থাপনা প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চিফ ইনোভেশন অফিসার (অতিরিক্ত সচিব) অসীম কুমার দে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেনে এটুআইয়ের নবনিযুক্ত প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর।

বন্ধ করতে কীবোর্ড থেকে ESC চাপুন